টেলিমেডিসিন কি? টেলিমেডিসিনের সুবিধা





সময়ের বিবর্তনে ও নানা সুবিধা থাকার কারণে ক্রমেই সারাবিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে টেলিমেডিসিন। এর ফলে চিকিৎসা পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। ঘরে বসে মানুষ পাচ্ছে নানা সুযোগ সুবিধা।


আজকের এ পোস্টের মাধ্যমে আমরা জানবো, টেলিমেডিসিন কি? টেলিমেডিসিনের কি কি সুবিধা রয়েছে। কেনইবা টেলিমেডিসিন এত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

 


টেলিমেডিসিন কি?


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, টেলিমেডিসিন হলো healing from a distance অর্থাৎ দূর হতে নিরাময়। টেলিমেডিসিন হচেছ এমন এক ধরণের চিকিৎসা ব্যবস্থা যেখানে একজন রোগী সশরীরে চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে ডাক্তারের সেবা গ্রহন করেন। এক্ষেত্রে ডিজিটাল ডিভাইস হিসাবে স্মার্ট ফোন, কম্পিউটার, ক্যামেরা ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।


 

কোন ধরণের রোগে টেলিমেডিসিন সেবা নেওয়া হয়?


পূর্বেই বলা হয়েছে, টেলিমেডিসিন সেবা হচেছ, ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে
দূর থেকে রোগীর অসুখের ধরন অনুধাবন করে চিকিৎসা দেয়ার পদ্ধতি।

 

মূলত, অপেক্ষকৃত কম জটিল রোগের ক্ষেত্রে টেলিমেডিসিন ব্যবহার করা হয়। এছাড়া, চিকিৎসা পরবর্তী ফলোআপে ও ওষুধের ডোজ সমন্বয় সাধনসহ আরো অনেক ব্যাপারে টেলিমেডিসিন ব্যবহার করা হয়। এতে করে একজন ডাক্তার ও রোগীর যেমন সময়ের সাশ্রয় হয় তেমনি আর্থিক লাভবান হন।


টেলিমেডিসিন এর ইতিহাস-

 

ঠিক কখন থেকে টেলিমেডিসিন চালু হয়েছে তা বলা দুষ্কর হলেও ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা যায়, ১৯২৪ সালের দিকে আমেরিকাতে বিশেষ এক ধরনের বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে রোগিদের দূর থেকে চিকিৎসা দেয়ার পদ্ধতি চালু ছিল।

 

১৯৪৮ সালের দিকে পেনসুলভেনিয়ার চিকিৎসকরা সর্বপ্রথম এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় মেডিকেল রিপোর্ট প্রদান করতে সক্ষম হয়। পরবর্তী সময়ে কানাডার

রেডিওলজিস্টরা একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেন যার মাধ্যমে মন্ট্রিল এবং এর আশেপাশের এলাকার রেডিওলজি সংক্রান্ত রিপোর্ট আদান প্রদান করা সম্ভব হয়। ১৯৫৯ সালের দিকে নেব্রাস্কা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকরা তাদের ক্যাম্পাসে থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিউরোলজিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্ট সরবরাহ করার জন্য দূরদর্শন যন্ত্র ব্যবহার করেন। তবে, বৃহৎ পরিসরে আমেরিকার সামরিক বাহিনী প্রাতিষ্ঠানিকভাবে টেলিমেডিসিন প্রথম চালু করে।

 

১৯৬০ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে আমেরিকার নাসা এবং সামরিক বাহিনী টেলিমেডিসিন খাতে ব্যাপক অর্থ ব্যায় করে যা আধুনিক টেলিমিডিসিন ব্যবস্থার গোড়া পত্তন করে। সময়ের পরিবর্তনে এবং প্রযুক্তির উৎকর্ষে ধীরে ধীরে টেলিমেডিসিন আধুনিক রূপ লাভ করেছে।


টেলিমেডিসিন এর সুবিধা-

ক) ডাক্তারের চেম্বার বা হাসপাতালে না গিয়ে ঘরে বসে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায়। কোন ভোগান্তি নাই।

খ) দ্রুততম সময়ের মধ্যে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায়।

গ ) যাতায়াত খরচ বা অতিরি সময় নষ্ট হয়না।

গ) গ্রামে বসে শহরের অথবা একদেশ থেকে অন্য দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যায়।

ঘ) সুবিধামতো সময়ে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে সশরীরে রোগি দেখার মতো কোন তাড়াহুড়ো থাকেনা।

ঙ) সহজে রোগ বিশ্লেষণ করা যায়।