সাইবার ক্রাইম অথবা সাইবার অপরাধ কি? বাঁচার উপায় সমূহ?




সাইবার ক্রাইম অথবা সাইবার অপরাধ কি? বাঁচার উপায় সমূহ?


বি.দ্র: এই পোস্ট পড়ে জানতে পারবেন সাইবার অপরাধ কাকে বলে। সাইবার অপরাধ নির্মূলের উপায় অথবা সাইবার অপরাধ প্রতিরোধের উপায় । সাইবার অপরাধ আইন। হ্যাকিং বলকে কি বুঝায়। স্প্যামিং বলতে কি বুঝায়।



সাইবার অপরাধ


সাইবার অপরাধ কি-


ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে কোন ধরনের অপরাধ করাকে সাইবার অপরাধ বলা হয়। খুব সাধারণ অর্থে সাইবার অপরাধ যে কোন ধরনের অনৈতিক কাজ । যা কম্পিউটার বা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে করা হয়।

যে কোন ধরনের তথ্য চুরি, তথ্য বিকৃতি, ব্ল্যাক মেইল, যে কোন ধরনের প্রতারণা ইত্যাদি কম্পিউটার বা ডিজিটাল ডিভাইস তথা প্রযুক্তির মাধ্যমে করা হলে, তাকে সাইবার ক্রাইম বলে।


 সাইবার অপরাধ আইন-

সাইবার অপরাধ প্রতিরোধের জন্য বাংলাদেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ প্রনয়ন করা হয়েছে।



সাইবার ক্রাইম এর প্রকারভেদ:



হ্যাকিং (Hacking)


হ্যাকিং বলকে কি বুঝায়-


হ্যাকিং বলতে কোন ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানের অনুমতি ব্যতীত তার কম্পিউটার নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে ওই কম্পিউটারকে মোহচ্ছন্ন করে তার নিয়ন্ত্রন নিজের মধ্যে নিয়ে আসাকে হ্যাকিং (Hacking) বলে।


যে হ্যাকিং করে তাকে হ্যাকার(Hacker) বলা হয়। হ্যাকার দুই ধরনের হতে পারে। ক) বৈধ খ) অবৈধ।



আরও পড়ুন:

কম্পিউটার কাকে বলে? কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য, প্রকারভেদ ও ব্যবহার

কৃত্রিম উপগ্রহ কি বা কাকে বলে? কৃত্রিম উপগ্রহের প্রকারভেদ ও ব্যবহার


 বৈধ হ্যাকার বলতে কি বুঝায়-


কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা তাদের সিস্টেমের সিকিউরিটি পরীক্ষার জন্য কিছু হ্যাকার নিয়োগ  করে। যারা ওই প্রতিষ্ঠানের সিস্টেমের সিকিউরিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। এরা ওই প্রতিষ্ঠানের সিস্টেম সিকিউরিটি পরীক্ষা করে কিন্তু কখনো সিস্টেমের কোন ক্ষতি করে না। তাকে বৈধ হ্যাকার বলা হয়।


যেমন; UNIX সিস্টেম চেক করার জন্য অনেক বৈধ হ্যাকার আছে।



অবৈধ হ্যাকার বলতে কি বুঝায়-


কিছু অবৈধ হ্যাকার রয়েছে যারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত সিকিউরিটি সিস্টেমে প্রবেশে করে সিস্টেমের কোন ক্ষতি করে। যারা অবৈধভাবে যারা হ্যাকিং করে তাদের ক্রেয়ার বলা হয়।



স্প্যামিং (Spamming)


স্প্যাম মেইল বলতে কি বুঝায়-


আমাদের ই-মেইল প্রায়ই কিছু অচেনা ও অপ্রয়োজনীয় ই-মেইল আসে। যা আমাদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাড়ায়। এ ধরনের ই-মেইলকে স্প্যাম (Spam) মেইল বলে।


তবে, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ই-মেইল এড্রেসে যখন লক্ষ লক্ষ মেইল প্রেরণের মাধ্যমে মেমোরি দখল করে নেয়। তখন থাকে স্প্যামিং বলে।



সাইবার আক্রমণ (Cyber Attack)

 

সাইবার আক্রমণ বলতে কি বুঝায়-

সাইবার আক্রমণ কে ইংরেজিতে Cyber Attack  বলা হয়। সাইবার আক্রমণ অথবা Cyber Attack এক ধরণের ইলেকট্রনিক আক্রমণ। যেখানে অপরাধীরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিনা অনুমতিতে কারো সিস্টেমে প্রবেশ করে কারো ফাইল, প্রোগ্রাম বা হার্ডওয়্যার ধ্বংস বা ক্ষতিসাধন করে। একে সাইবার Vandalism ও বলা হয়।


সাইবার হয়রানি (Cyberstalking)-  সাইবার হয়রানি কে ইংরেজিতে Cyberstalking বলা হয়। অপরাধীরা ই-মেইল, ব্লগ অথবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কাউকে হুমকি, কারো নামে অপপ্রচার, যৌন হয়রানি ইত্যাদি অপরাধমূলক কাজ করাকে সাইবার হয়রানি অথবা Cyberstalking বলে।



সাইবার চুরি (Cyber Theft)- 


সাইবার চুরি মূলত দুই ভাবে বিভক্ত। ক) ডাটা চুরি (DataTheft)  খ) ব্যক্তি পরিচয় চুরি(Identify Theft)।


ডাটা চুরি (DataTheft) - 


কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কতৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত অবৈধ উপায়ে তথ্য কপি করাকে ডাটা চুরি (DataTheft)  বলা হয়।



ব্যক্তি পরিচয় চুরি (Identify Theft)-


এক ব্যক্তির পরিচয় ব্যবহার করে অন্য কোনো ব্যক্তি কিছু ক্রয় বা কিছু অনৈতিক কাজ করে তার দায়ভার প্রথমোক্ত ব্যক্তির উপর চাপানোকে ব্যক্তি পরিচয় চুরি (Identify Theft) বলে।




 সাইবার অপরাধ প্রতিরোধের উপায়-


ক) না বুঝে অথবা অচেনা অপরিচিত উৎস থেকে কিছু ডাউনলোড করা যাবেনা।


খ) সবসময় সিস্টেমে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।


খ) প্রতিনিয়ত সফ্টওয়্যার আপডেট রাখতে হবে।


ঘ) ফোন থেকে অপ্রয়োজনীয় সফ্টওয়্যার ডিলিট কিরে দিতে হবে।


ঙ) কোন ওয়েবসাইটে ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়ার আগে দেখতে হবে আপনি বৈধ ওয়েবসাইটে রয়েছেন কিনা।


চ) নিজের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর সন্দেহজনক বা অজানা ওয়েবসাইটে ব্যাবহার করা যাবেনা।


ছ) ব্যবহৃত ডিভাইস বিক্রি করার আগে সংবেদনশীল অ্যাপ্লিকেশনগুলি ডিলিট করে দিতে হবে এবং ফোনটিকে ফরম্যাট দিতে হবে।


এগুলো মানার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই সাইবার ক্রাইম থেকে রক্ষা পেতে পারবেন।